Header Ads Widget

শিরোনাম

6/recent/ticker-posts

পুরাতন মোবাইল কেনার সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিৎ

পুরাতন মোবাইল কেনার কথা ভাবছেন? তাহলে এই পোষ্টটি অবশ্যই দেখুন। কারণ এ পোস্টে এমন কিছু টিপস শেয়ার করা হয়েছে যেগুলো আপনার একটি পুরাতন মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই দেখা উচিত। নয়তো আপনি প্রতারিত হবেন বা বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে। 


পুরাতন-মোবাইল-কেনার-সময়-করনীয়

বর্তমান সময়ে মোবাইল ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুব কমই দেখা যায়। আমরা সবাই দামি বা সস্তা যে কোন মোবাইল ব্যবহার করে থাকি। অনেকের কাছে দামি মোবাইল এর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও টাকার সমস্যার কারণে নতুন মোবাইল কিনতে পারে না। আবার অনেকেই নতুন মোবাইল না কিনে second hand mobile কিনতে চান। তখন আমরা পুরাতন মোবাইল কিনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেই। অনেকেই দেখা যায় মোবাইল কিনব বলেই কোন কিছু না ভেবে ঝটপট পুরাতন মোবাইল কিনে ফেলেন। এটা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনার পুরাতন মোবাইল কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই ভাবতে হবে।

পুরাতন মোবাইল কেনার সময় করণীয়

যারা পুরাতন মোবাইল কিনতে চান তাদের জন্য আমি নিচে কয়েকটি second hand mobile buying tips শেয়ার করলাম। এগুলো অনুসরণ করলে আশা করি আপনি ঠকবেন না।

১. মোবাইলের মালিকানা যাচাই

পুরাতন মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয় এর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে তা হলো মোবাইলের মালিকানা। নইতো ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কারন অনেকে অন্যের মোবাইল চুরি করে বিক্রি করতে পারে। তাই আগে দেখে নিবেন এটি চুরির কিনা। বিক্রেতা যে মোবাইলটির প্রকৃত মালিক বা মোবাইলটি যে চুরির নয় তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু বিষয় দেখতে পারেন। যেমন-

  • মোবাইল ক্রয়ের রশিদ

পুরাতন মোবাইল ক্রয় করার আগে আপনাকে অবশ্যই বিক্রেতার কাছ থেকে মোবাইলটি পূর্বের ক্রয়ের রশিদটি চেয়ে নিতে হবে। যদিও অনেকেই এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু আপনি যদি এটি নিশ্চিত হতে চান যে এটি চুরির মোবাইল নয় বা বিক্রেতা নিজেই এই মোবাইলের মালিক তাহলে অবশ্যই আপনাকে রশিদটি নিতে হবে।

  • IMEI Number মিলানো

ক্রয় রশিদে ওই উক্ত মোবাইলের IMEI লিপিবদ্ধ আছে কিনা চেক করে নিন। পুরাতন মোবাইল থেকে *#০৬# ডায়াল করলেই ওই ফোনের IMEI number টি পাবেন। রশিদটিতে যদি ওই মোবাইলের হয় তাহলে রশিদে ওই IMEI নাম্বারটি  থাকবে।

২. মোবাইলটির বৈধতা যাচাই

এবার আপনাকে দেখতে হবে মোবাইলটি বৈধ কিনা। অর্থাৎ মোবাইলটির আইএমইআই নাম্বারটি রেজিস্ট্রেশন করা আছে কিনা। প্রথমে আপনি মোবাইলে IMEI চেক করে নিন। যদি এটি সরকারের ডাটাবেজে থাকে তাহলে তা মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারবেন।

৩. মোবাইলটির ব্রান্ড

বর্তমানে অনেক ডুপ্লিকেট ফোন পাওয়া যায়। যেগুলো দেখতে হুবহু অরিজিনাল বলে মনে হয়। পুরাতন মোবাইল কেনার আগে আপনাকে এটাও দেখে নিতে হবে যে আপনি যে মোবাইলটা কিনতে যাচ্ছেন এটি অরিজিনাল কিনা। এর জন্য আপনি ভাল করে মোবাইলটি লক্ষ্য করুন। বিশেষ করে সেটিংসে গিয়ে এই ফোনের সকল কনফিগারেশন গুলো চেক করে নিন এবং ইন্টারনেটে চেক করে নিন এই ফোনের কনফিগারেশন গুলোর সাথে ইন্টারনেটে দেওয়া অরিজিনাল মোবাইলটির কনফিগারেশন গুলো মিল আছে কিনা। যদি সব ঠিক থাকে তাহলে তো ভালোই।

৪. মোবাইলটির বাহ্যিক অংশ যাচাই

মোবাইলটির বাইরের চারপাশে ভালো করে দেখে নিন কোন দাগ বা কোন ভাঙ্গার চিহ্ন রয়েছে কিনা। সাথে ভলিউম এবং পাওয়ার বাটন গুলো ভালো করে চেক করে নিন। অনেক সময় এই বাটন গুলোতে সমস্যা থাকে। যদি মোবাইলটিতে কাভার লাগানো থাকে তাহলে mobile cover টি খুলে ভালোভাবে চেক করে দেখুন। এগুলো করলে আপনার আরেকটা সুবিধা হবে যে মোবাইলটি কতটুকু অর্থাৎ কত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে তার ধারনা পেতে পারেন।

৫. ডিসপ্লে যাচাই

পুরাতন মোবাইল কেনার আগে মোবাইলটি কিছুক্ষণ ব্যবহার করে দেখুন। পুরাতন মোবাইলে অনেক সময় ডিসপ্লে সমস্যা থাকে। তাই আপনি কিছুক্ষণ চালানোর পর বুঝতে পারবেন মোবাইলের ডিসপ্লে কোন সমস্যা আছে কিনা। সাথে আপনি এটাও বুঝতে পারবেন যে আপনার এই ফোনটি ভালো হবে কিনা। এটার স্পীড কেমন তাও জানতে পারবেন। অথবা ব্যবহার করতে গেলে কোন সমস্যা দেখা দেয় কিনা তাও জানতে পারবেন।

৬. মোবাইলের পোর্ট যাচাই

মোবাইলের পোর্টগুলো ভালো করে লক্ষ্য করুন। অনেক সময় দেখা যায় পুরাতন মোবাইলে পোর্টগুলো বিশেষ করে Headphone এর জ্যাক এর পোর্ট, চার্জার পোর্টে সমস্যা থাকে। এখানে আপনাকে একটি সিক্রেট বলে রাখি, আপনি যদি চার্জারের পোর্টটি ভালো করে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন মোবাইলটি কত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে। কারন যত বেশি ব্যবহার করবে তত বেশি চার্জে লাগাতে হবে। যার কারনে চার্জার পোর্টটি অনেকটা ক্ষয় হয়ে যায়।

৭. অন্যান্য

মোবাইলের আরো কিছু অতিরিক্ত তথ্য আপনাকে যাচাই করি নিতে হবে। যেমন মোবাইলটির ক্যামেরা কত ম্যাগাপিক্সেলের? RAM ও ROM কতটুকু আছে? এটির প্রসেসর কেমন? এটির  VERSION কত? ফোনটির নেটওয়ার্ক সিগন্যাল কেমন? মোবাইলটির চার্জিং অবস্থা কেমন? এই মোবাইল থেকে আপনার পরিচিত কারো সাথে কথা বলে মাউথ স্পিকার ও ইয়ার স্পিকার চেক করে নিন। কারণ অনেক সময় মাউথ স্পিকার বা ইয়ার স্পিকারের সমস্যা থাকতে পারে। সব ভালো ভাবে দেখে নিন। নয়তো দেখা যাবে আপনি মোবাইলটি কিনতে বেশি দাম দিয়ে দিলেন কিন্তু এটি তেমন ভালো নয় এমন একটি মোবাইল কিনে ফেলবেন।

৮. দাম নির্ধারণ

Second hand mobile মানেই দামও ওভাবেই বলতে হবে। সব কিছু দেখার পর যদি মোবাইলটি ভালো মনে হয় তাহলে মোবাইলটির দাম ঠিক করুন। মোবাইলটির এমন একটা দাম নির্ধারণ করুন যাতে আপনার জন্য সাশ্রয়ী হয়। দামের ব্যাপারে ধারনার জন্য আপনি চাইলে ইন্টারনেট থেকে মোবাইলটির বর্তমান বাজার দাম দেখে নিন। তারপর মোবাইলের কনফিগারেশন ও আগে কত সময় পর্যন্ত এটি ব্যবহার করা হয়েছে ইত্যাদির উপর নির্ভর করে একটি দাম ঠিক করে নিন।

উপরের দেখানো টিপস গুলো অনুসরণ করলে আশা করি আপনি সাশ্রয়ী দামে খুব ভালো একটি পুরাতন মোবাইল কিনতে পারবেন এবং পুরাতন মোবাইল কিনতে গিয়ে আর আপনি ঠকবেন না। আমার দেখানো টিপসগুলো ছাড়াও যদি আপনি অন্য কোন টিপস জানা থাকে তাহলে এটিও এপ্লাই করে দেখতে পারেন।

পোস্টটি ভালো লাগলে আপনার পরিচিত সবার সাথে শেয়ার করুন। আপনার একটি শেয়ার হয়তো আপনার পরিচিত কোন ব্যক্তিকে বিপদ বা প্রতারকের হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন। আমার পোস্টটি আপনার কাছে কেমন লাগলো তা নিচে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারেন। আপনার মন্তব্য আমাকে আরো টিপস শেয়ার করার অনুপ্রেরণা যোগাবে। ধন্যবাদ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ